বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেক্স : বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে বরগুনার পুরাকাটা এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নয়ন বন্ডের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন।
নিহত নয়ন বন্ড বরগুনা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কলেজ রোড এলাকার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকের ছেলে এবং রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে নয়ন বন্ডকে গ্রেপ্তার করতে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা এলাকায় অভিযান চালাতে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।
দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে নয়ন বন্ড বাহিনী পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে নয়ন বন্ডের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্যেও আহত হন।
বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দুটি শর্টগানের গুলির খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রীর সামনেই সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারী নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সঙ্গে লড়াই করেও তাদের থামাতে পারেননি।
গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ২৭ জুন হত্যা মামলা করেন রিফাত শরীফের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ।
ওই ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-সমালোচনার ঝড় ওঠে। স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিক মিন্নির আপ্রাণ চেষ্টা ছুঁয়ে যায় গোটা দেশবাসীকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। পুলিশের পক্ষ থেকে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়। রিফাত শরীফের খুনিরা যেন দেশ ছাড়তে না পারে, সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। এজন্য দেশের সকল বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরে নির্দেশনা পাঠানো হয়।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে মূল আসামি নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী এবং রিশান ফরাজী ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছিল। তাদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড আজ সকালে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।